ঢাকা    বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
গণবার্তা

বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধে সীমান্তে ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ পচনের মুখে

বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধে সীমান্তে ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ পচনের মুখে

উৎপাদনে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টা এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবার পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ভারতের রপ্তানিকারক এবং বাংলাদেশি বড় ব্যবসায়ীরা। সীমান্তে অন্তত ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হওয়ার অবস্থায় রয়েছে

ভারতীয় রপ্তানিকারকদের বড় ক্ষতি

শোনা যায়, সীমান্তের ঘোজাডাঙ্গা, পেট্রাপোল, মাহাদিপুর ও হিলি এলাকায় মজুত করা পেঁয়াজ এখন মাত্র ২ রুপি কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নাসিক থেকে ১৬ রুপিতে কেনা ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে সীমান্তে পৌঁছানোর খরচ হয় ২২ রুপি। এখন তারা প্রায় বিনামূল্যে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

শতাধিক শ্রমিক নিয়ে ব্যবসায়ীরা ভালো পেঁয়াজ আলাদা করার চেষ্টা করলেও পচন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত

হিলি ও সোনা মসজিদ এলাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে মৌখিক আশ্বাস পাওয়ার পর ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) বন্ধ করে দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। ফলে বাংলাদেশি অন্তত ৩০–৪০ জন বড় ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন

হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের অভিযোগ, সরকার হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজ খালাস করতে পারেননি। এটিকে ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির বলছেন অনেকে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের অবস্থান

সরকার বলছে, এই সিদ্ধান্ত মূলত সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য বড় বার্তা। দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যবসায়ী বছরের শেষ দিকে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে আমদানিতে চাপ দিতেন। এবার কৃষকরা হাতে থাকা পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছেন।

এক কর্মকর্তা জানান—

  • দেশের বার্ষিক চাহিদা: ২৮ লাখ টন

  • গত মৌসুমে উৎপাদন: ৪৪ লাখ টন

  • বর্তমানে বাজারে ও কৃষকের হাতে: ৩ লাখ+ টন পুরাতন পেঁয়াজ

  • গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ এসেছে: ৭০-৮০ হাজার টন

  • ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ২.৫ লাখ টন বাজারে আসবে

  • ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে

এ অবস্থায় আমদানির দরকার নেই বলেই সরকারের সিদ্ধান্ত।

চাপ উপেক্ষা করে সরকারের অনড় অবস্থান

২,৮০০টি আমদানির আবেদনও কৃষি মন্ত্রণালয় বিবেচনা করেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চাপের পরও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন—

“কৃষকের স্বার্থে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বদল হবে না।”

সীমান্তে কোটি টাকার পেঁয়াজ এখন পচে যাচ্ছে

বিশেষ করে মাহাদিপুর–সোনামসজিদ সীমান্তে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ ২ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশে পেঁয়াজ এখনো প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন

গণবার্তা

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫


বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধে সীমান্তে ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ পচনের মুখে

প্রকাশের তারিখ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫

featured Image
উৎপাদনে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রচেষ্টা এবং কৃষকের স্বার্থ রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবার পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ভারতের রপ্তানিকারক এবং বাংলাদেশি বড় ব্যবসায়ীরা। সীমান্তে অন্তত ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ এখন পচে নষ্ট হওয়ার অবস্থায় রয়েছে।ভারতীয় রপ্তানিকারকদের বড় ক্ষতিশোনা যায়, সীমান্তের ঘোজাডাঙ্গা, পেট্রাপোল, মাহাদিপুর ও হিলি এলাকায় মজুত করা পেঁয়াজ এখন মাত্র ২ রুপি কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। নাসিক থেকে ১৬ রুপিতে কেনা ও পরিবহন খরচ মিলিয়ে সীমান্তে পৌঁছানোর খরচ হয় ২২ রুপি। এখন তারা প্রায় বিনামূল্যে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।শতাধিক শ্রমিক নিয়ে ব্যবসায়ীরা ভালো পেঁয়াজ আলাদা করার চেষ্টা করলেও পচন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্তহিলি ও সোনা মসজিদ এলাকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশ থেকে মৌখিক আশ্বাস পাওয়ার পর ভারতীয় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ মজুত করেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) বন্ধ করে দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়। ফলে বাংলাদেশি অন্তত ৩০–৪০ জন বড় ব্যবসায়ী কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন।হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের অভিযোগ, সরকার হঠাৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তারা সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজ খালাস করতে পারেননি। এটিকে ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির বলছেন অনেকে।কৃষি মন্ত্রণালয়ের অবস্থানসরকার বলছে, এই সিদ্ধান্ত মূলত সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য বড় বার্তা। দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যবসায়ী বছরের শেষ দিকে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে আমদানিতে চাপ দিতেন। এবার কৃষকরা হাতে থাকা পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রেখেছেন।এক কর্মকর্তা জানান— দেশের বার্ষিক চাহিদা: ২৮ লাখ টন গত মৌসুমে উৎপাদন: ৪৪ লাখ টন বর্তমানে বাজারে ও কৃষকের হাতে: ৩ লাখ+ টন পুরাতন পেঁয়াজ গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ এসেছে: ৭০-৮০ হাজার টন ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ২.৫ লাখ টন বাজারে আসবে ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে এ অবস্থায় আমদানির দরকার নেই বলেই সরকারের সিদ্ধান্ত।চাপ উপেক্ষা করে সরকারের অনড় অবস্থান২,৮০০টি আমদানির আবেদনও কৃষি মন্ত্রণালয় বিবেচনা করেনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চাপের পরও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়নি। কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন— “কৃষকের স্বার্থে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত বদল হবে না।” সীমান্তে কোটি টাকার পেঁয়াজ এখন পচে যাচ্ছে বিশেষ করে মাহাদিপুর–সোনামসজিদ সীমান্তে ২০ হাজার টন পেঁয়াজ ২ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশে পেঁয়াজ এখনো প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গণবার্তা

সম্পাদকঃ নূর মোহাম্মদ 
প্রকাশকঃ ফিরোজ আল-মামুন 

কপিরাইট © ২০২৫ সর্বস্ব সংরক্ষিত গণবার্তা