ঢাকা: দেশের ক্রমবর্ধমান শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার নতুন বিধিমালা জারি করেছে। আজ মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে। ২০০৬ সালের পূর্ববর্তী বিধিমালা বাতিল করে এবার এলাকা-ভিত্তিক শব্দমাত্রা, হর্ন ব্যবহার নিষেধাজ্ঞা, শিল্প ও বাণিজ্যিক স্থাপনার দায়বদ্ধতা এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরও কঠোরভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন বিধিমালায় দিনের সময় ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা, আর রাতের সময় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ও রাতে ৪০ ডেসিবল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ও রাতে ৪৫ ডেসিবল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ও রাতে ৫০ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ও রাতে ৬০ ডেসিবল, আর শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ও রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দ অনুমোদিত থাকবে।
বিধিমালায় অতিরিক্ত শব্দ সৃষ্টিকারী হর্ন, হাইড্রোলিক ও মাল্টি-টিউন হর্নের প্রস্তুতি, আমদানি, মজুদ ও বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নীরব এলাকায় হর্ন বাজানো যাবে না, আর আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ।
শিল্প কারখানা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক ভবনের জেনারেটর ব্যবহারের ক্ষেত্রে শব্দ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ বাধ্যতামূলক। বনাঞ্চল, বন্যপ্রাণীর আবাস ও সামাজিক অনুষ্ঠানেও উচ্চ শব্দের উৎস ব্যবহার সীমিত করা হয়েছে।
অনুমোদনবিহীন হর্ন প্রস্তুত, বিক্রয় বা আমদানিতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড।
মোটরযান/নৌযানে অনুমোদনহীন হর্ন ব্যবহার বা নীরব এলাকায় হর্ন বাজালে সর্বোচ্চ তিন মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা। চালকের লাইসেন্স থেকে এক পয়েন্ট কাটা হবে।
অন্যান্য বিধি ভঙ্গের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ এক মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
নির্বাচনে নীরব এলাকায় মাইক, লাউডস্পিকার বা শব্দবর্ধক যন্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ। অন্যান্য এলাকায় ৬০ ডেসিবেলের বেশি শব্দের অনুমতি নেই, এবং প্রচারের সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ভোটের তিন সপ্তাহ আগে প্রচার শুরু করা যাবে না, ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে সব প্রচার বন্ধ করতে হবে।
ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের সাজা ও ১.৫ লাখ টাকা জরিমানা, প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকবে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৬ নভেম্বর ২০২৫

আপনার মতামত লিখুন